রিজিক বৃদ্ধির শ্রেষ্ঠ আমল
মুসলিম মাত্রই বিশেষ করেন যে তার আয় ও উপার্জন, জীবন ও মৃত্যূ এবং সৌভাগ্য ও দূর্ভাগ্য ইত্যাদি নিধারণ হয়ে যায়, যখন তিনি মায়ের পেতে শিশু অবস্থায় থাকেন তখনি।
ইবাদাত |
আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায় উপকরণ গুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব হলো হাত গুটিয়ে বসে না থেকে রিযিকের জন্য নির্ধারিত উপায় উপকরণ সংগ্রহের চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ , ব্যবসা - বাণিজ্য , চাকরি ইত্যাদি। আল্লাহ বলেন , "তিনিই তো তুমাদের জন্য জমিনকে সগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ করো এবং তার দেয়া রিযিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তার নিকটেই টুওমরা প্রত্যাবর্তন করবে।"(সুরাহা আল-মূলক :১৫)
আজ আমরা রিজিক বৃদ্ধির উপায়সমূহের মধ্যে কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত পাঁচটি আমলের কথা আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
প্রথম আমল: তাকওয়া ও তাওয়াক্কুল অবলম্বন করা। আল্লাহকে ভয় তথা তাকওয়া অবলম্বন করা , অর্থ্যাৎ আল্লাহর নিৰ্দেশাবলী পালন করা এবং হারাম বা নিষিদ্ধ বিষয়গুলো বর্জন করা। পাশাপাশি আল্লাহর উপর অতল আস্থা রাখা। তাওয়াককুল করা এবং রিজিক তালাশে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করা। কারণ, যে আল্লাহর উপর ভরসা করে তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।
এই প্রশঙ্গে আল্লাহ বলেছেন,"যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ তৈরি করে দেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দিবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। এবং আল্লাহ তার উদ্দেশ্য পূর্ণ করবেনই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রত্যেক জিনিসের জন্য একটি সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। "(সুরাহা আত-তালাক:২-৩ )
সুতরাং , যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করবে এবং তার অনুগত করবে , আল্লাহ তার সকল সংকট দূর করে দেবেন এবং তার কল্পনাতীত স্থান থেকে রিজিকের ব্যাবস্তা করে দেবেন।
দ্বিতীয় আমল: তওবা ও ইস্তেগফার করা। অধিক পরিমানে ইস্তেগফার এবং বেশি বেশি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেও রিজিক বৃদ্ধি পায়।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "যে বেক্তি নিয়মিত ইস্তেগফার (আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা) করবে আল্লাহ তাকে সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন, সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিজিকের সংস্থান করে দেবেন।" ( আবু দাউদ:১৫২০, ইবন মজা:৩৮১৯)
তৃতীয় আমল: আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখলে এবং তাদের হক আদায় করলে রিজিক বৃদ্ধি পায়। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, যে বেক্তি কামনা করে যে, তার রিজিক প্রশস্ত করে দেয়া হোক এবং তার আয়ু দীর্ঘ করা হোক , তাহলে সে যেন তার আত্নীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে। (বোখারী :৫৯৮৫)
চতূর্থ আমল: নবী (সাঃ) এর ওপর বেশি বেশি দূরদ পাঠ করা। রাসূল (সাঃ) ওপর দূরদ পাঠেও রিজিক প্রশস্ত হয়।
তোফায়েল ইবনে উবাই ইবনে কা'ব (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত , তিনি বলেন যে, আমি রাসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর নবী, আমি আপনার প্রতি অধিকহরে দূরদ পড়তে চাই, অতএব আমার দুয়ার মধ্যে আপনার দূরূদের জন্য কতটুকু অংশ রাখবো ? রাসূল (সাঃ) বললেন, তুমি যতটুকু চাও। কা'ব বললেন , এক চতুর্থাংশ। রাসূল (সাঃ) বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি আরো বেশি দুরূদ পড়, তা তুমার জন্য উত্তম হবে। কা'ব বললেন, তাহলে অর্ধেক ? উত্তরে রাসূল (সাঃ) বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি আরো বেশি দুরূদ পড়, তা তুমার জন্য উত্তম হবে। কা'ব আবার বললেন, তাহলে ইবাদারের বা দুয়ার দুই-তৃতীয়াংশ? উত্তরে রাসূল (সাঃ) বললেন, তুমি যতটুকু চাও। তবে তুমি আরো বেশি দুরূদ পড়, তা তুমার জন্য উত্তম হবে।
কা'ব আবার বললেন, তাহলে আমার দুয়ার পুরোটা জোরে শুধু আপনার দূরদ রাখবো। তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, তাহলে তো তোমার যামেলা ও প্রয়োজনের জন্য যথেষ্ট হবে এবং আল্লাহ তুমার গুনাহ ক্ষমা করবেন।
পঞ্চম আমল : ইবাদতের জন্য নিজেকে ঝামেলা মুক্ত করা। অর্থাৎ ইবাদতের জন্য ঝামেলামুক্ত হলে এর মাধমেও অভাব দূর হয় এবং প্রাচুর্য লাভ হয়।
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসোলুল্লাহ সাঃ বলেছেন , আল্লাহ তাআলা বলেন, "হে আদিম সন্তান , আমার এবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও , আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র ঘুচিয়ে দেব। আর যদি তা না করো , তবে তুমার হাত ব্যাস্ততায় ভরে দেব এবং তুমার অভাব দূর করবো না।" (তিরমিযী ২৬৫৪ নং হাদিস হাদিস )
No comments